আমাদের বিবেক





জাজাফী

নিজের কাজটি সঠিক ভাবে করে যাওয়াই দেশ প্রেম। যে তার নিজের কর্তব্য কাজ সঠিক ভাবে করেনা সে প্রকারান্তে দেশ প্রেম থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছে। আর যে দেশকে ভালবাসেনা সেইতো দেশের জন্য বোঝা স্বরুপ। স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে আমাদের জন্মের অনেক আগে।তার পর ক্ষমতার পালাবদলের সাথে সাথে নানা সময় স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস পরিবর্তিত হয়েছে। যেন অনেকটা নদীর স্রোতের মত এই একদিকে যাচ্ছে তো কিছুক্ষণ পর দিক পরিবর্তন হচ্ছে। সময়ের সাথে সাথে তাই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসও বাক নিয়েছে নানা দিকে। সবাই দাবী করে তারাই সত্যের পথে আর বাকিরা মিথ্যা বানোয়াটি। এর পর যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের সামনে তুলে ধরা হলো স্বাধীনতার বিপক্ষের মানুষ আর স্বপক্ষের মানুষ এই দুই ধরনের শ্রেনী ব্যবধান।আপাত দৃষ্টিতে ১৯৭১ সালে যারা দেশ স্বাধীন হোক এটার পক্ষে ছিল তারাই স্বাধীনতার স্বপক্ষের লোক আর যারা অখন্ড পাকিস্তান চেয়েছিল তারা স্বাধীনতার বিপক্ষের লোক।কালে কালে এ ঘাটের জল ও ঘাটে গড়িয়েছে এবং আমাদের সময়েই কতিপয় স্বাধীনতার বিপক্ষের লোকের অপরাধ প্রমান করে মৃত্যু দন্ড প্রদান করা হয়েছে। তার মানে এ প্রশ্ন এক দিক থেকে অবান্তর যে কে স্বাধীনতার বিপক্ষে। কারণ এখন সবাই বুঝে গেছে জেনে গেছে কে বা কারা স্বাধীনতার বিপক্ষে।মুক্তিযুদ্ধে যারা প্রাণ বাজি রেখে এই দেশ স্বাধীন করেছিল তাদের অনেকেই খেতাব ধারী। আবার তারাই সময়ে সময়ে এমন সব কান্ড ঘটিয়েছে যা দেখে মনে হয় তারাও স্বাধীনতার বিপক্ষে। বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছিল তারাও স্বাধীনতার বিপক্ষে।মনে পড়ে কর্ণেল তাহেরের কথা? তিনিও খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন এবং তাকে ফাসী দেওয়া হলো।যারা ফাসী দিল তাদেরকেও যুক্তি তর্কে স্বাধীনতার বিপক্ষের লোক বলে প্রমান করা যাবে। অথচ তারাও ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতার বিপক্ষে কারা সেটা বের করার আগে জানা উচিত স্বাধীনতার স্বপক্ষে কারা। স্বাধীন এই দেশটাকে যারা মনে প্রাণে ভালবাসে এবং দেশের সার্বিক মঙ্গল কামনা করে তারাই স্বাধীনতার পক্ষের লোক এর বাইরে যারা আছে তারা সবাই স্বাধীনতার বিপক্ষের লোক।যে ট্রাফিক পুলিশ টাকার বিনিময়ে অবৈধ পন্য বোঝাই ট্রাক ছেড়ে দেয় সে স্বাধীনতার বিপক্ষে। যে অবৈধ পন্য স্বাধীন এই দেশে প্রবেশ করায় সে স্বাধীনতার বিপক্ষে। পরীক্ষার সময় যারা প্রশ্ন পত্র ফাস করে তারা স্বাধীনতার বিপক্ষে। যারা শিক্ষার আনুপাতিক মান বাড়ানোর জন্য গণ হারে এ প্লাস দেওয়ার ফরমান জারি করে তারা স্বাধীনতার বিপক্ষে।যারা ক্রিকেট দল ভাল খেললে তাদের মাথায় তুলে নাচে এবং খারাপ খেললে বাবা মা তুলে গালি দেয় তারাও স্বাধীনতার বিপক্ষে।শরীরে শক্তি থাকার পরও কাজ না করে যারা ভিক্ষা করে এবং ডাকাতি ও ছিনতাই করে তারা স্বাধীনতার বিপক্ষে।ভোটের সময় যারা মিষ্টি কথা আর প্রতিশ্রুতির বান ডেকে ক্ষমতায় যাওয়ার পর জনগনের কথা মনে রাখেনা তারাও স্বাধীনতার বিপক্ষে।যারা সরকারী দলকে চাপে রাখতে পণ্য আটকে রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে তারা স্বাধীনতার বিপক্ষে।বিশ্ববিদ্যালয়ের হল গুলোতে সিট পেতে হলে যাদের কথা মত উঠবস করতে হয় তারাও স্বাধীনতার বিপক্ষে। স্বাধীনতার বিপক্ষে প্রকারান্তে অনেকেই।তাই কেবল মাত্র চিহ্নিত লোক গুলোকেই স্বাধীনতার বিপক্ষের লোক মনে করে বাকিদের কথা ভুলে গেলে চলবে না। স্বাধীনতার বিপক্ষের মানুষগুলোকে শুধরে দিতে না পারলে স্বাধীনতার সুফল পাওয়া যাবেনা কোন দিনই।।
……………………………………………………………………………………………………………


মানুষ গড়ার কারিগর যদি মানুষ না হয় তবে সে কি শেখাবে

মানুষ গড়ার কারীগর যদি নিজেই মানুষ না হয়,তবে সে কি করে মানুষ গড়বে?
আমাদের কোমলমতি শিশু-কিশোর যারা বিদ্যার্জন নামক দুর্লভ বস্তু আহরণের জন্য দিন-রাত ছুটছে, তাদের অবস্থা খুবই নাজুক। বর্তমান যুগে যারা আধুনিক অভিভাবক, তাদের অধিকাংশের সন্তান একটি বা দু'টি। ফলে আমাদের সন্তানদের প্রতি আমাদের প্রত্যাশা এতো বেশি যে, সন্তানকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট, বড় আমলা, বিজ্ঞানী সবকিছু বানাতে হবে, এমন ভাবনায় আমরা পাগলের মতো দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করছি। আর এ সুযোগ নিচ্ছে বিদ্যা নিয়ে বর্তমানে ব্যবসায় জড়িত শিক্ষক ও বিদ্যাপিঠের মালিক ও ব্যবস্থাপনা কমিটি। ছেলেমেয়েদের আমরা এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করতে দিতে চাই না। এমনিতেই ঢাকা শহরের শিশু-কিশোরদের জন্য খেলাধুলার কোনো সুযোগ নেই, অধিকন্তু অতিরিক্ত লেখাপড়ার চাপে শিশুদের মানসিক ও স্বাভাবিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে তাদের হয়ত ভিন জগতের মানুষে পরিণত করছি আমরা।
শিশু-কিশোরদের সামাজিকীকরণ যে একটি প্রকৃত ও অতি প্রয়োজনীয় শিক্ষা তা বুঝতে চেষ্টা করি না। অতি ব্যস্ততার কারণে আমরা যেমন আত্মীয়স্বজনের বাড়ি বেড়াতে যাই না, তেমনি কোনো আত্মীয়স্বজন বাসায় এসে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার ক্ষতি করুক, সেটাও পছন্দ করি না। ফলে ছেলেমেয়েরা আত্মীয়দের তেমন চেনে না। যৌথ পরিবার না থাকায় চাচাতো মামাতো ভাইবোন বা অন্যান্য নিকটাত্মীয়দের মধ্যে বন্ধন সৃষ্টি হয় না। এর ফলে আমরা আমাদের অজান্তেই শিশুদের এক ঘরে করে ফেলছি। তাই আজকালকার শিশু কিশোররা অন্তঃমুখী হয়ে বেড়ে উঠছে এবং তারা নতুন পরিবেশে বা অপরিচিতজনদের কাছ থেকে নিজেদেরকে লুকিয়ে রাখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। যা কোনোভাবেই সুস্থ আচরণের বহিঃপ্রকাশ নয়।
অতিরিক্ত লেখাপড়ার চাপ শিশুদের শুধু যে মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে বা মানসিক পীড়া সৃষ্টি করে, তা নয়, এটি তাদের শারীরিক সমস্যাও সৃষ্টি করে। সমপ্রতি চিকিৎসা বিজ্ঞানভিত্তিক সাময়িকী ল্যানচেট-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গেছে, এশিয়ার প্রধান প্রধান শহরের বিদ্যালয়ে লেখাপাড়া শেষ করা শিক্ষার্থীদের ৯০ শতাংশ ক্ষীণদৃষ্টি সমস্যায় ভুগছে। গবেষকরা বলেছেন, বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার অতিরিক্ত চাপ এবং বাইরের প্রাকৃতিক আলো থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণেই ক্ষীণদৃষ্টিজনিত সমস্যা এত প্রকট আকার ধারণ করেছে।
তাই আসুন আমাদের শিশু কিশোরদের সত্যিকার শৈশব কৈশর ফিরিয়ে দিই। ওদের জীবন হয়ে উঠুক আনন্দঘন। কোচিং আর প্রাইভেট টিউটরদের দৌরাত্ব কমে যাক এটা প্রত্যাশা করি এবং সেই সাথে স্কুল গুলোতে যেন শিক্ষকেরা আগের মত আন্তরিকতা নিয়ে পড়ান সেই জোর দাবী জানাই। শিক্ষক স্কুলে নিজ দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন না করে ছাত্রছাত্রীকে বাসায় প্রাইভেটে আসতে বলার যে প্রচলন শুরু হয়েছে তা বন্ধ হওয়া উচিত। ওই সব শিক্ষকদের বলতে চাই কদিনইবা বাচবেন তাহলে এতো ফাকিবাজি করে ধান্দা করে টাকা আয় করে কি হবে বলুন? আপনারা নাকি শিক্ষক আর শিক্ষক নাকি মানুষ গড়ার কারীগর। আপনারা নিজেরাইতো মানুষ হতে পারেন নি তাহলে অন্যকে কিভাবে মানুষ করবেন?
--------- ছোটদেরবন্ধু

কি শিক্ষা দিচ্ছে কোমল মতি শিশুদের

বাংলাদেশের সেই সব অভিভাবকদের কাছে আমাদের প্রশ্ন যাদের সন্তানদের দেশ সেরা স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য সকাল সন্ধ্যা বাচ্চার উপর বইয়ের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছেন এবং কেউ কেউ মোটা অংকের ডোনেশান দিয়েছেন আপনারা কি বলতে পারেন যদি নামি দামি সেই সব স্কুলে বাচ্চাকে ভর্তি করানোর পরও সেই বাচ্চাকে সেই স্কুলের স্যারদের কাছে কিংবা অন্য কোন স্যার বা কোচিংএ প্রাইভেট পড়াতেই হবে তাহলে নামি দামি স্কুলে ভর্তি করে লাভ কি?
যে টাকা ওই স্কুলে ভর্তির জন্য বাচ্চার পিছনে খরচ করেছেন কিংবা ডোনেশান দিয়েছেন কিংবা কোচিং প্রাইভেট করে খরচ করেছেন সেই টাকা আপনার হাতে রাখুন। বাচ্চাকে বাসার পাশের অখ্যাত কোন স্কুলে ভর্তি করান। তার পর সেই হাতে রাখা টাকা গুলো বাচ্চার পড়াশোনার এবং সার্বিক কল্যানের জন্য খরচ করুন। দেখবেন আপনার বাচ্চা ওই সব নামি দামি স্কুলের সেরা ছাত্র ছাত্রীর চেয়ে কোন অংশেই খারাপ রেজাল্ট করবে না। বরং তার উপর প্রেশার কম থাকায় সে বরং পড়াশোনার পাশাপাশি কোকারিকুলার একটিভিটিস গুলোতেও ভাল করবে।তাদের শৈশব কৈশর হারিয়ে যাবেনা।
মূল কথা হচ্ছে ভাল স্কুলে ভর্তির জন্য যদি এতোই দৌড়ঝাপ করবো তাহলে কেন বাচ্চাকে ধর্ম কিংবা শারিরীক শিক্ষা বিষয়েও স্কুলেরই টিচারের বাসায় প্রাইভেট পড়তে যেতে হবে? ভাল স্কুল নামি দামি স্কুল তাহলে আপনার বাচ্চাকে কি দিচ্ছে? সেই স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য কেন তবে উঠে পড়ে লেগেছেন? আপনি জানেন যে আপনি নিজে আপনার সন্তানের মেধাকে আপনার সন্তানের সুন্দর শৈশব কৈশরকে ধ্বংস করছেন! নাহ এই সহজ কথাটা বোঝার মত জ্ঞান সৃষ্টিকর্তা আপনাকে দেয়নি।
কোচিং প্রাইভেটে যদি যেতেই হয় তাহলে নামি দামি স্কুল আর ঘরের পাশের সাধারণ স্কুলের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? চলুন তবে বুয়েট মেডিকেল ঢাকা ভার্সিটি বা অন্য যে কোন ভার্সিটিতে যে কোন বিভাগে গিয়ে খোজ নিয়ে জেনে নেই কে কোন স্কুল থেকে পড়ে এসেছে। অধিকাংশই গ্রাম থেকে মফস্বল শহর থেকে এসেছে। আমি দিনাজপুরের কথাই বলি। দিনাজপুরের সাধারণ স্কুল থেকে যে হারে বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েট মেডিকেলে চান্স পাচ্ছে এই শহরের নামি দামি স্কুল থেকে পাশ করা ছাত্ররা আনুপাতিক ভাবে সেই হারে চান্স পাচ্ছেনা। সাধারণ স্কুলের ছাত্রটির জন্য যা ব্যয় হয়েছে তার দশগুন ব্যয় হচ্ছে শহরের ছাত্র ছাত্রীর জন্য। এই যে ব্যয় হচ্ছে এটা তৈরি করেছি আমরা নিজেরা অভিভাবকেরা। আমার মনে করছি ভাল স্কুলে ভর্তি না করলে আমাদের সন্তানেরা ভাল মানুষ হতে পারবে না প্রতিষ্ঠিত হতে পারবেনা। এটা সম্পুর্ন ভুল ধারনা। বেরিয়ে আসুন আপনাদের দিবাস্বপ্ন থেকে। বাস্তবতা বুঝতে চেষ্টা করুন। এই সব শিক্ষাবানিজ্যের বিরুদ্ধে এখনি সোচ্চার হোন। নতুবা আপনার আমার সন্তান ভাই বোন কাগজে কলমে ভাল রেজাল্টধারী হবে কিন্তু বাস্তব জীবনে কি হবে সেটা সময়ই বলে দেবে।
প্রাইভেট এবং কোচিং যেখানে করতেই হচ্ছে সেখানে নামি দামি স্কুলে পড়ানো আর না পড়ানো সমান কথা। বরং ওই সব প্রতিষ্ঠান একই সাথে আপনার সন্তানের উপর নানা প্রেশার তৈরি করছে এবং আপনার পকেট খালি হচ্ছে। তাই মিছেই ভ্রমের পিছনে ছুটবেন না। বাচ্চার ভবিষ্যতের কথা যদি চিন্তা করতেই হয় তবে ভেবে দেখুন আপনি ভুল পথেই এগোচ্ছেন।
--- ছোটদেরবন্ধু

বিভাজিত বাঙালী জাতিসত্ত্বা

আমরা শত ভাগে বিভক্ত এক জাতি। যদি দশজন বাঙ্গালী কবি সাহিত্যিকের নামের তালিকা করতে বলি দেখা যাবে সেখানে প্রথম সারির কবি সাহিত্যিকরা থাকবেন কিন্তু যদি একজন কবি বা সাহিত্যিককে নির্বাচিত করতে বলি তো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাজী নজরুল ইসলামের নাম অবলিলাক্রমে বাদ পড়বে। একদল রীবন্দ্রনাথের নাম কেটে নজরুলের নাম বসাবে আর একদল নজরুলের নাম কেটে রবীন্দ্রনাথের নাম বসাবে।

দশজন রাজনীতিবিদের নামের তালিকা করতে বললে দেখা যাবে শেরে বাংলা থেকে ভাসানী হয়ে বঙ্গবন্ধু অবধারিত ভাবেই থাকবেন। জিয়াউর রহমান এরশাদও হয়তো থাকবে এবং মতিউর রহমান নিজামিরাও মতাদর্শীদের তালিকায় ঠাই পাবে। কিন্তু যদি একজনের নাম উল্লেখ করতে বলা হয় তবে বাদ পড়বেন শেরে বাংলা বাদ পড়বেন ভাসানী জিয়াউর রহমান এবং বঙ্গবন্ধুকেও বাদ দিবে এ দেশের অনেক মানুষ। নিজের মতাদর্শের বাইরের কাউকেই আমরা কৃতীত্ব দিতে রাজি নই। তাহলে দেশটাকে আমরা উন্নত করবো কি করে?

এ দেশের রাস্তায় রাস্তায় গিয়ে মতামত নিয়ে দেখুন দেশের অগণিত টিভি চ্যানেলের একটাকেও কেউ নিরপেক্ষ হিসেবে ভোট দিবেনা। একটা পত্রিকাকেও নিরপেক্ষ হিসেবে দেখেনে এ দেশের প্রতিটি মানুষ।
বাসের কন্ট্রাকটর মনে করে যাত্রীরা তাকে জোর করে কম ভাড়া দিচ্ছে আর যাত্রীরা মনে করে বাসের লোকেরা জোর করে তাদের থেকে বেশি ভাড়া আদায় করছে।
মেয়েরা মনে করছে নিয়মিত তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে আর ছেলেরা মনে করছে সম অধিকারের নামে মেয়েদের নানা ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

সরকারী দল মনে করে বিগত সময়ে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা কিছুই করেনি,সব উন্নয়ন তারা করেছে। আর বিরোধী দল মনে করে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
ট্রেনের যাত্রীদের অনেকেই মনে করে ট্রেনতো সরকারের টাকায় চলে। ভাড়া না দিলেইবা কি আর টিটি মনে করে যাদের থেকে টাকা নিলাম তারাতো ফাও। টাকা গুলো জমা না দিলেইবা কি।
বাংলা মিডিয়ামের ছেলে মেয়েরা মনে করছে আরে ধুর ইংলিশ মিডিয়ামের ছেলে মেয়েরা আবার কিছু শেখে নাকি? আর ইংলিশ মিডিয়ামের ছেলে মেয়েরা মনে করছে বাংলা মিডিয়ামে পড়ে কি জীবনে কিছু করা যায় নাকি।

রাজউকিয়ানরা বলছে "রাজউকিয়ান্স আর বর্ন টু লিড" ডিআরএমসি খোচা দিচ্ছে এনডিসিকে আর এনডিসি খোচাচ্ছে অন্যদেরকে।
বুয়েটিয়ানরা পাত্তা দিচ্ছেনা ঢাবিকে আর ঢাবি পাত্তা দিচ্ছেনা বুয়েটিয়ানদের।
সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকেই মনে করছে বেসরকারীতে কি আর কোন লেখাপড়া হয়। হুদাই বিশাল সিজিপিএ দেওয়া হচ্ছে। আর বেসরকারীরা মনে করছে সরকারীতে পড়ে জীবনে কিছুই করা যায়না। সময় নষ্ট হয়।

মেসি ভক্তরা মনে করে রোনালদো মেসির ধারে কাছেও নেই আর রোনালদো ভক্তরা মনে করছে মেসি আবার খেলা শিখলো কবে?
মেরাডোনা আর পেলের কথা বাদই দিলাম। তারা গলা ফাটিয়ে নিজেদের ঢোল পিটিয়ে কি প্রমান করতে চাইছে তা জানিনা। নিজেদের সেরা বলা না বলায় পাবলিকের কিছু যায় আসেনা। পাবলিক নিজে যা মনে করে তাই করবে। বিশেষত বাঙ্গালীরাতো অবশ্যই।
একটা গল্প শুনুন। অনেক বছর আগে মাগুরাতে নিতাই রায় চৌধুরী তার মাকে বলেছে মা এবার কিন্তু নির্বাচনে নৌকা নেই। তাই তুমি আমার লাঙ্গলেই ভোট দিও। বৃদ্ধা মা ছেলেকে কথা দিয়েছেন। নির্বাচন বুথে গিয়ে দেখলেন নৌকা আছে তখন নিজের ছেলেকে ভোট না দিয়ে তিনি নৌকাতেই ভোট দিলেন। বাড়ি ফিরে বললেন কিরে নিতাই এবার নাকি নৌকা নেই? আমিতো দেখলাম নৌকা আছে। নৌকাতেই ভোট দিয়ে এসেছি।

মোদ্দা কথা হলো কামারে যা করে তা মনে মনেই করে।