আমার বেদনা



জাজাফী
.....................
জান দিয়ে মান দিয়ে লিখি যাই কবিতা
ছিড়ে ফেলে টান দিয়ে ছোট মেয়ে ছবিতা


আম খাব জাম খাব বলে কাদে ছেলেটা
কবিতানা ছাই লেখ বলোতো কি পেলেটা

আমি বলি কিছুনারে এযে বড় অভ্যাস
কবিতা লিেখই আমি করেছি যে সব শ্যাষ

পাশের বাড়ির ভাবি ডেকে নিয়ে সন্ধ্যায়
কবিতা লেখা ছাড় এই বলে জ্ঞান দেয়

আমি ভাই কি করি এই ভাবে মরেছি
এখানে লিখে লিখে মনটাকে ভরেছি

কথা বলা বন্ধ


জাজাফী

.....................

তিন দিন হল ভাই কথা বলা বন্ধ
তাই নিয়ে গোলমেলে হয়ে গেছে ছন্দ

কবিতা যা লিখি আমি তাতো নয় কাব্য
কেউ কেউ গালি দেয় ভাষা যে অস্রাব্য

শেষে আমি কিযে করি লেখা দেব ক্ষান্ত
যাতা লিখে আমি ভাই একেবারে ক্লান্ত

তার আগমন এবং প্রস্থানের মাঝে আমি



.............জাজাফী

 
সে প্রথম এসেছিল বসন্ত হয়ে আমাকে রাঙাতে
আমি নিজে যতটা না সে আমাকে রাঙিয়েছে তার চেয়ে বেশি।

ক্রমে ক্রমে সে হয়ে উঠলো শরৎ সন্ধ্যা
আমার জীবনের বেলাভূমি ভরে উঠলো শুভ্র কাশফুলে
ঝিরি ঝিরি হাওয়া মনকে মাতাল করে দিল।

সে প্রথম এসেছিল বসন্ত হয়ে আমাকে রাঙাতে
ক্রমান্বয়ে সে শরৎ এবঙ হেমন্ত হলো
আমার আমিকে নিত্য দিনে অন্য আমিতে ফিরে পেলাম।

শীতের স্নিগ্ধ সকাল হলো
গোধুলীতে হলো পশ্চিম আকাশের সোনালী সূয
সন্ধ্যায় সে আমাকে দিল কোমল জোছনা।

সে প্রথম এসেছিল বসন্ত হয়ে আমাকে রাঙাতে
হঠাৎ সে হয়ে উঠলো উত্তপ্ত গ্রীস্মকাল
চৈত্রের দাবানলের মত আমাকে জ্বালিয়ে দিল
সেই দাবানলের জ্বলন্ত আগুনে আমি পুড়ছি
সে আগুন নেভাতে এগার বছর আমার চোখে বর্ষাধারা।

জাজাফী
এস এম হল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১৬ অক্টোবর ২০১০

এক প্রভাতে





….জাজাফী

শহীদ বেদীটা আরেকটু উচু হলো
ওখানে আজ ফুল দিতে এসেছিল কিছু তরুন
ভাইয়ের হাত ধরে এসেছিল তের বছরের মুনা
মাথায় লাল ফিতা বেধে আরও এসেছিল মুক্তিযোদ্ধা।

শাহবাগ থেকে কতইবার দূর
একটু হেটে গেলেই মেডিকেল মোড়
সেখানে ঠায় দাড়ানো জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শহীদবেদী
ফুলে ফুলে ভরে ওঠা বেদীর পাশের দেয়ালে দেয়ালে
শোভা পাচ্ছে চল্লিশ বছরের ফিকে হয়ে যাওয়া দাবী
ওদের ফাসী চাই।


আম্রকাননে নতুন মুকুল আসার আগে
গাছি গাছ থেকে খেজুর রসের ভাড় নামানোর আগে
নবগঙ্গার মাঝি নৌকায় পালতোলার আগে
ওদের ফাসী চাই।

গগণ বিদারী চিৎকারে এ আকাশ ফাটিয়ে দাও
শাহবাগ মোড় থেকে যে কন্ঠে কবির সুমন গান গেয়েছিল
সেই কন্ঠের ধ্বনি প্রতিধ্বনিতে বীণার তার ছিড়ে ফেল
তুলে নিয়ে আসো শিখা অনির্বাণের জ্বলন্ত শিখা
কন্ঠ মিলিয়ে বলে ওঠো ওদের ফাসী চাই।



লোকান্তর




জাজাফী

…………………..
হৃদয়ভরা স্বপ্ন ছিল যে স্বপ্নটা ভেঙে চুরে
স্বপ্নে এসে মায়াবিনী চলে গেছে অচিনপুরে।

হয়তো আমার হৃদয় ভরা পাহাড় সম প্রেমছিলনা
হয়তো আমার মনের মাঝে স্বপ্ন রঙিন ঘরছিলনা।

কেবল ছিল নিরাশা আর ছিন্ন দুটো বকূল মালা
হয়তো আমি সাজাইনিকো তোমার তরে ফুলের ডালা।

তা বলে সেই দিনগুলিকে এমন করে অবহেলে
বিজন পথে একলা ফেলে অচিন পুরে চলে গেলে।

বকূল মালা শুকিয়ে যেত দেইনি তাতে দোষকি বলো
নাহয় মোরা সাজিয়ে নিতাম মনের ছোট্ট স্বপ্নগুলো।

তারও আগে তুমি হঠাৎ কোন আকাশে উড়াল দিলে
যেন খোকার হাতের পিঠা ছো মেরেছে ভূবন চিলে।

ভূবন চিলের কাজই এমন সে দেয় হানা ইচ্ছেমত
স্মৃতি গুলো ছিনিয়ে নিয়ে ফেলে রাখে দারুন ক্ষত।

কারো জীবন এমন করেই হয়তো কাটে অন্ধকারে
যে গেছে সে চলে গেলেও ভুলে থাকা যায়না তারে।

যাবার আগে একটি বারও এই কথাটা ভাবতে যদি
শুকাতোনা অকালে আজ ভালবাসার ছোট্ট নদী।

যেথায় থাকিস শুকতারা তুই যে মেঘ তোরে আড়াল করুক
আমি তোকে রাখবো মনে,তোর ঘরে রোজ সুখ ঝরুক।

ফিরিয়ে দাও আমার চোখে



জাজাফী
..................................

তোমার মুখটা এখন আর মনে পড়েনা
শিল্পীর তুলিতে  কিংবা ক্যামেরার নিখুত চোখে
বৈশাখের সোনালী বিকেলে
পৃথিবীর সব ছবি ভেসে ওঠে পলকে
কেবল একটি বারের জন্যও তোমার ছবিটা ভেসে ওঠেনা
আমি কষ্টের সাগরে হাবুডুবু খাই।

এখন আমার কেবলই মনে হয় ওটা তোমার অভিশাপ ছিল
না হলে এতো কিছু মনে হয় কেবল তোমার মুখটা ছাড়া
তোমার অভিশাপ তুমি ফিরিয়ে নাও
ভালোবাসার এক রত্তিও দেবেনা জানি
তোমার ছবিটা আমার চোখে ফিরিয়ে দাও।

অভিশাপ দিতে মুখের ভাষা থেমে যেত
অভিশাপ দিতে চোখের আলো নিভে যেত
গতি পথ শ্লথ হতো,হাতের কলম থেমে যেত
তারপরও যদি তোমার ছবিটা কল্পনায় ভেসে আসতো
তুমি অভিশাপ দিলে,কল্পনার চোখেও তোমার ছবিটা মুছে গেল।

তোমার অভিশাপে কল্পনার চোখ কালো চাদরে ঢাকা পড়ে গেল
মুছে গেল তোমাকে ঘিরে বেড়ে ওঠা সব স্মৃতি
ভালোবাসার অপরাধে তুমি আমায় ফাসীতে চড়াওনি
দিয়ে গেছ তোমার স্মৃতিহীন বেচে থাকার যন্ত্রণা।

হে ঢেউ খেলানো চুলের উবর্শী ললনা
হে ভালোবাসার সাগরের জল কন্যা
তোমার অভিশাপ তুমি ফিরিয়ে নাও
ফিরিয়ে দাও আমার চোখে তোমার ছবিখানি।

২৬ অক্টোবর ২০১২
মধুখালি, বাসে বসে

তোমার চলে যাবার দিন



জাজাফী
...............

তোমার চলে যাবার দিনের কথা এখন আমার বেশ মনে পড়ে
মনে পড়ার মত ছিল বলেই হয়তো ভুলতে পারিনি
যখন আমাদের ভালোবাসা অষ্ট্রপ্রহর পেরোয়নি
মালার দুই প্রান্ত জুড়ে দেয়ার আগেই তুমি হলে উদাসীন
মুরুর বুকে ছায়া হয়ে আসা এক খন্ড মেঘের মতো
তুমিও হঠাৎ উধাও হলে।

যখন এসেছিলে গোলাপী ঠোটের কোণে ছিল হাসির রেখা
চলে যাবার দিনে সেই হাসি আরো দ্যুতিময় হলো
কুয়াশাচ্ছন্ন আর দশটা ভোরের মতো ছিলনা সকাল
তারপরও সেটা আমার চোখে ধোয়াশা ঘেরা।

আর দশটা মানুষের মতো আমিও ভুলে যেতে পারতাম
পাষান হৃদয় আমার কোন কালেও ছিলনা
তাই ভুলে যাবার চেষ্টাও করিনি কখনো
সেই হাসি এখনো আমাকে পুলকিত করে
রোদ বাতাসে মেশা তোমার সে সোনালী চুল
এখনো হৃদয় মুরুর বুকে আনন্দের ঝড় তোলে।

এতো কিছুর পর তোমার চলে যাবার দিনের কথা ভুলি কি করে
তুমি না বলে চলে গেলে তোমার স্বাধীনতা
 চলে যাবার পরও তোমায় মনে রাখা
এক না পাওয়া হৃদয়ে জমে থাকা ভালোবাসা।

২৬ অক্টোবর ২০১২
ফরিদপুর, বাসে বসে।

আমাদের দুজনের সেই সব ক্ষণ



জাজাফী
.........................
এসো! ভালোবাসার বৃষ্টিতে ভিজতে এখন আর বাধা নেই
এখন আকাশে রূপালী চাদ সবটুকু জোছনা ঢেলে দিয়ে
আমন্ত্রণের ডালা সাজিয়ে নাও ভাসিয়েছে প্রেম যমুনায়
বকূলের মালা হয়তো সে তোমায় দিতে পারবেনা
চাপা ফুলের মিষ্টি গন্ধে সে তোমায় ভাসিয়ে দেবে।

মনে করো একটা নির্ঝরিনীর পাশে তুমি আর আমি
ওপারে আদিগন্ত সবুজ প্রন্তর,আকাশে সফেদ মেঘের ভেলা
এক প্রান্তে সমুদ্রের নীল জলরাশি ছুয়ে ঠায় দাড়ানো পাহাড়
ঝিরিঝিরি বাতাস তোমার চুল নিয়ে খেলায় মেতেছে
সেই খেলার একমাত্র দর্শক আমি।

শুভ্র কাশফুলে ছেয়ে যাওয়া কাশবনে তোমার অবাধ সাতার
হিমেল হাওয়ায় ক্ষণে ক্ষণে কেপে ওঠা তোমার ঠোট
আমার বাহুডোরে বাধা তোমার লতানো কোমল হিয়া
দুঃখ নেই,হাতাশাও নেই, নেই ফিরে যাবার ভাবনা
আমরা দুজন,কেবল দুজন পৃথিবীর কোমল শোভায়
মিলে মিশে একাকার প্রেমিক যুগল।

এখন সীমাহীন আকাশে ডানা মেলে ধরো
তোমার হাসির ফুলঝুরিতে থমকে দাড়াক পূবোন বাতাস
বনের পাখি,আকাশের মেঘ,সমুদ্রে পাল তোলা
নৌকা সে হাসির শব্দে থমকে দাড়াক
আমাদের প্রেম হয়ে উঠুক সোমেশ্বরী নদীর স্বচ্ছ জল
বিরিশিরি থেকে আমরা যখন ফিরবো
আমাদের হৃদয়ে তখন অযুত রহস্যভেদী নির্মল প্রেম।

২৬ অক্টোবর ২০১২
রাজবাড়ী, বাসে বসে।

কেন যে তোমার সামনে এলাম




…….জাজাফী

মানুষ রূপে তোমার সামনে আসাই আমার ভুল ছিল
ভালোবাসার হাতটি প্রসস্থ করে বাড়িয়ে ছিলাম একগুচ্ছ কদম ফুল
গ্রহণ করাতো দূরের কথা,তোমার পদাঘাতও পড়লোনা
ভালোবাসার ডানা মেলে তোমার সামনে আসাই আমার ভুল ছিল।

মানুষ রূপে না এসে যদি শঙ্খ নদীর জল হতাম
তুমি সেথায় রোজ বিকেলে অবগাহন করতে
কাশ ফুল হলে তোমার কোমল ছোয়ায়
আমার হৃদয় সাগরে ঢেউ উঠতো
শঙ্খ নদীর জল হইনি,শুভ্র কাশফুলও হতে পারিনি
মানুষ রূপে তোমার সামনে আসাই আমার ভুল ছিল।

শুকিয়ে গেছে প্রসস্থ হাতে বাড়িয়ে ধরা গোলাপ কূড়ি
ভালোবাসার দিঘীতে ফুটতে ফুটতে সাতটি পদ্মই ফুটে গেছে
তোমার অনাদরে হৃদয় আজ ঝরা পাতার মত শুষ্ক
মানুষ রূপে তোমার সামনে আসাই আমার ভুল ছিল।

এর চেয়ে ভাল ছিল মেঠো পথ হওয়া
যে পথের ধূলো কাদাও তোমার ছোয়া পেত
এর চেয়ে ভাল ছিল পাখি হওয়া
যে পাখির রঙিন ডানায় তোমার স্বপ্ন পাখা মেলতো
মানুষ রূপে তোমার সামনে আসাই আমার ভুল ছিল।

২৬ অক্টোবর ২০১২ মাগুরা